নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে পাহাড়ি এলাকায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে পতিত শুকনো পাতা । সংরক্ষিত বন এলাকায় গজারি, গামার, আকাশমণি, কালেক্টর ইত্যাদি নামক বৃক্ষ রয়েছে।

উপজেলার শুকনি, গৌরীশ্বর, লেংড়াবাজার, চৌডাল, জয়নাবাড়ী, ভাটপাড়া, মোনারপাড়া, বিদুরিয়া, গুয়াগম্ভীর বিভিন্ন এলাকায় পাতা-কুড়ানিদের দেখতে পাওয়া যায়। ঘাটাইল-সাগরদীঘি সড়ক ধরে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময় কান পাতলেই শোনা যায় পাতা-কুড়ানিদের পাতা খুঁটে একত্রীত করার দুর্লভ শব্দ। তাঁরা শুকনো পাতা খুঁটার কাজে কখনো ঝাড়ু, কখনও লোহা-কাঠ দিয়ে তৈরি বিশেষ যন্ত্র ব্যবহার করেন। পাতা-কুড়ানি নারীরা সঙ্গবদ্ধ হয়ে পাতা সুরার কাজ করে থাকেন।শুকনো পাতা একত্রীত করে বস্তায় ভরে সেগুলো বাড়ীতে নিয়া রান্নার কাজে ব্যবহার করেন।ঝাঁটা দিয়ে পতিত শুকনো পাতা একত্রীত করে বিক্রি করার এই কর্মযজ্ঞ অর্থনীতিক আলাপে জায়গা না পেলেও ‘দিন আনা, দিন খাওয়া’ সাহসী এইসব নারীরা পাতা কুড়িয়ে বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে সেগুলো দিয়ে ভাত রান্না করে।জীবিকার তাগিদে পরিশ্রমী পাতা-কুড়ানিরা সারাদিন গাছের শুকনো পাতা কুড়ানোর কাজ করছেন। এই কাজে নারীদেরকেই বেশী দেখা যায়। নারী হিসেবে মৌলিক অধিকারটুকু নিয়ে বেঁচে থাকাই অনেকটা দায় হলেও পাতা-কুড়ানিদের এই উপার্জন সংসারে কিছুটা হলেও অবদান রাখছে। পাতাগুলো শুকনো হওয়ায় রান্নার কাজে এই পাতার বিশেষ চাহিদা রয়েছে। কথা বলছিলেন ,ঘাটাইল উপজেলার “ধারিয়াল ,চৌডাল, জয়নাবাড়ী, ভাটপাড়া, মোনারপাড়া, বিদুরিয়া, গুয়াগম্ভীর বিভিন্ন এলাকা থেকে পাতা-কুড়ানিদের সাথে, “সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাতা কুড়িয়ে একত্রীত করে বস্তায় ভরে বাড়ীতে নিয়ে যাই। আমরা পাতা বিক্রি করি না, নিজেদের রান্নার কাজে এগুলো ব্যবহার করি। আমাদের তো গ্যাস বা খড়িজাবা কিনে রান্না করে খাওয়ার মতো সামর্থ্য নাই। তাই সংসারের নানা খরচের অতিরিক্ত যোগান দিতে পাতা খুঁটি। ফাল্গুন আর চৈত্র এই দুইমাস ঠিকমতো পাতা কুড়ালে সারা বছর রান্নার খড়ির জন্য চিন্তা করতে হয় না। জিনিসপাতির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাগো গরিবের দিনাপিপাত আগের মতো আর চলে না”।তাঁরা বনের গাছের পতিত পাতা কুড়িয়ে বস্তায় ভরে বাড়ীতে নিয়ে গিয়ে তা রান্নার কাজে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করেন এবং কখনো সেসব বাজারে বা পাইকারদের নিকট বিক্রিও করেন।সারাদিনে একজনে ৫/৭ বস্তা পাতা কুড়াতে পারেন বলে পাতা কুড়াঁনিরা জানান।ঘাটাইলের ধলাপাড়া রেঞ্জের ঝরকা বিট কর্মকর্তা সোলায়মান হোসেন জানান, বনের গাছের পতিত পাতা কুড়াতে কখনও বাঁধা দেয়া হয় না। পাতা কুড়িয়ে যদি কোন গরিব নারীর কিছু উপকার হয় তবে সেটি অবশ্যই দোষের কিছু নয়। তাছাড়া পতিত শুকনো পাতা কুড়িয়ে নিয়ে গেলে বনেরও উপকার হয়। কারন অসতর্কতায় বিড়ি সিগারেট থেকে বনে আগুন লাগতে পারে। তাঁরা পাতা কুড়িয়ে নিয়ে যাওয়ায় এই ঝুঁকি থেকেও কিছুটা মুক্ত থাকা যায়। তবে পাতা কুড়ানোর ওজুহাতে কেউ গাছ কাটছে কি-না বা অন্য কোন অপরাধের সাথে জড়িত কিনা, সেসব বিষয়ে আমরা সদা সতর্ক।