ঘাটাইলে যথাযোগ্য মর্যাদায় হানাদার মুক্ত দিবস পালিত


ঘাটাইল প্রতিনিধি ॥
গতকাল মঙ্গলবার ঘাটাইল হানাদারমুক্ত দিবস যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে স্থানীয় প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড দিন ব্যাপি বিভিন্ন কর্মসুচি গ্রহন করেন। কর্মসুচির মধ্যে ছিল শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণ, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা।

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর পাক হানাদারের কবল থেকে মুক্ত হয় টাঙ্গাইলের ঘাটাইল। দীর্ঘ নয় মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধে ঘাটাইলের মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কাদেরিয়া বাহিনীতে বিশেষ বীরত্বের অবদান রাখেন এই এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা। কাদেরিয়া বাহিনীর নেতৃত্বে যমুনা নদীতে পাকিস্থানী যুদ্ধ জাহাজ ধবংস করা হয়। এ সময় মুক্তিসেনারা ২১ কোটি টাকার গোলা বারুদ ও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র কব্জা করে দিযে মুক্তিযুদ্ধের নতুন দিগন্তের সূচনা করেন। কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে কাদেরিয়া বাহিনী গঠিত হবার পর ঘাটাইলের সব মুক্তিযোদ্ধা কাদেরিয়া বাহিনীর সঙ্গে একীভূত হয়ে পাক বাহিনী ও রাজাকারদের বিরুদ্ধে দুর্বার লড়াই গড়ে তুলে। মাকড়াই যুদ্ধে কাদের সিদ্দিকীর হাতে গুলি লাগলে তিনি মারাত্বক আহত হন। ৭ ডিসেম্বর ভুঞাপুর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয় ৮ ডিসেম্বর রাত্রেই ঘাটাইলের প্রতিটি পাকবাহিনীর অবস্থানে এক যোগে আক্রমন করা হবে খোদ কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে। এই মর্মে প্রতিটি কোম্পানী ও কোম্পানী কমান্ডারদের আক্রমন স্থল নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এই লক্ষ্যে ৫ হাজার মক্তিযোদ্ধাকে ৩০টি কোম্পানীতে বিভক্ত করে ৫টি মূল দলে ভাগ করে আক্রমনের স্থান নির্ধারণ করা হয়। ৮ ডিসেম্বর রাত ১১টায় হাবিবুল হক বেনুসহ আরও একটি কোম্পানী রতনপুর অবস্থান নেয়। গোলাপের নেতৃত্বে ৩০/৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে বানিয়া পাড়া সেতুর পশ্চিম পাশে তেলেঙ্গাপাড়া গ্রামে অবস্থান নেয়। ৯ ডিসেম্বর কাদের সি্িদ্দকীর নিদের্শ অনুযায়ী কালিদাস পাড়া, গুণগ্রাম, ঘাটাইল সদর ও বানিয়া পাড়া সেতু একযোগে আক্রমণ করা হবে। সে পকিল্পনা মোতাবেক ভোর চারটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত চতুর্দিক থেকে বৃষ্টির মত গুলি ছুড়তে ছুড়তে ঘাটাইল থানা আক্রমণ করেন মুক্তি বাহিনীরা। পরে মেজর হাবিব ভোরে বানিয়া পাড়া সেতু, মেজর মোস্তফা কালিদাসপাড়া সেতু দখল করে ঘাটাইল থানার দিকে অগ্রসর হন। কাদের সিদ্দিকী নিজেই পশ্চিম দিক থেকে আক্রমণ করেন। এ যুদ্ধে ৫০ জন পাকহানাদার নিহত ও ১৫০ জন বন্দী হয়।এই দিন সম্পূর্ণরূপে ঘাটাইল থেকে হানাদার মুক্ত হয়। দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব আতাউর রহমান খান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.শহিদুল ইসলাম লেবু, ঘাটাইল পৌর সভার মেয়র শহিদুজ্জামান খান (ভিপি শহীদ) , উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম, সরকারী জি.বি.জি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শামছুল আলম মনি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো.তোফাজ্জল হোসেন, ডেপুটি কমান্ডার শাহনেওয়াজ ।

পরিচিতি Ibrahim Bhuiyan

এটাও চেক করতে পারেন

ঘাটাইলে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে একসঙ্গে তিন বন্ধুর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে একসঙ্গে তিন বন্ধুর মৃত্যুর ঘটনা …

Leave a Reply

Your email address will not be published.