লোকাল নিউজ ডেস্কঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দশানি বকশিয়া গ্রামে ৪ মাস ১১ দিন পর মৃত ওসমান নামের এক ব্যক্তির গলিত লাশ উত্তোলন করা হয়েছে । বৃহস্পতিবার (১০) অক্টোবর বেলা ১১ টার দিকে দশানি বকশিয়া কবর স্থান থেকে লাশ উত্তোলন করা হয় । জমি নিয়ে ঝগড়া করে ওসমান মারা গেলে লাশ ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন করে। পরে মৃত ওসমানের ভাই সালামত বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে ১৮ আগষ্ট টাঙ্গাইল কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে টাঙ্গাইল আদালত ওসমানের লাশ ময়না তদন্তের জন্য ১০ অক্টোবর উত্তোলনের দিন ধার্য করে ।
মামলার বাদী সালামাত জানায়, আমার ভোগ দখলিয় জমিতে জোড় করে নাজিম উদ্দিন গংরা মাটিকাটার প্রক্রিয়া করে । পরে তাদের রোধকল্পে ১২ মে টাঙ্গাইল ফৌজদারী আইনে ১৪৪ ধারা মামলা দায়ের করলে । এতে আসামীরা নোটিশ প্রাপ্ত হইলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে । পরবর্তীতে ১৭ মে রাতে তারাবী নামাজ শেষে সংঘব্ধ হয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে মারপিট করে । এতে বাদী সহ রমিজুল, মাসুদ, ঠান্ডু ও মৃত ওসমান মারাত্মক আহত হয় । মারপিট দিয়ে ক্ষ্যান্ত হননি পাশাপাশি ঘাটাইল থানায় মামলা নং ১২১/১৯ দিয়ে গ্রেফতার করতঃ জেল হাজতে প্রেরণ করে । ২৮ মে তারিখ মৃত ওসমান জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়িতে আসলে বিবাদীরা খবর পেয়ে পূনরায় পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে বাড়িতে হামলা চালায় । ওসমান ভয়ে খাটের নিচে পালানোর চেষ্টা করলে তাকে খাটের নিচ থেকে টেনে হেচঁড়ে বেড় করে এলো পাথারি মারপিট শুরু করে। এসময় ওসমাসনের স্ত্রী রেহেনা তাদের বাধা দিলে আসামী আনিছুর, বাবলু, মনি এবং নাজিম উদ্দিন ওসমান কে খুন করিয়া ফেলার উদ্দেশ্যে দুইহাত দিয়ে গলায় চাপিয়া ধরে স্বাশরুদ্ধ করে মৃত্য নিশ্চিত করে চলে যায় । পরে জক্ষমী ওসমান কে ২৯ মে টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় । সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার আনুমানিক সকাল ৮:৩০ ঘটিকায় ওসমানকে মৃত্য ঘোষনা করে । ঘাটাইল থানায় ১২১/১৯ জিআর মামলায় ওসমানের বাড়ির লোকজন জেল হাজতে থাকায় এবং প্রভাবশালী মহলের হুমকিতে আসামীরা ওসমানের ছেলে টুটুল ও মেয়ে ছবির নিকট হইতে বে-আইনি ভাবে জোর পূর্বক স্বাক্ষর নিয়া মৃত ওসমানের লাশ ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফন করে। পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে মৃত ওসমানের ভাই সালামত বাদী হয়ে ১৮ আগষ্ট ৬ জনকে আসামী করে টাঙ্গাইল কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন। আসামীরা হল- (১) নাজিম উদ্দিন (৩২) পিতা- আইন উদ্দিন তালুকদার(২) মুন্ন তালুকদার (৩৫) পিতা- মৃতঃ মোতাহের তালুকদার(৩) আনিছুর তালুকদার (৪৫) পিতা- মৃতঃ আইন উদ্দিন তালুকদার(৪) বাবলু মিয়া (৪৮) পিতা- মৃতঃ মোতালেব তালুকদার।(৫) মনি মিয়া (৫৮) পিতা- মৃতঃ মোতহের তালুকদার(৬) আব্দুর রহমান খান (৬০) পিতা- মৃতঃ পিনজির খান। সর্ব সাকিন- দশানী বকশিয়া, ইউনিয়ন-লোকেরপাড়া, থানা- ঘাটাইল, জেলা- টাঙ্গাইল। আরোও অজ্ঞাত ৫/৬ জন আসামী রয়েছে ।
আসামীদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি।আসামী পক্ষের মো:লাভলু মিয়া বলেন,ওসমান সত্যিকারেই অসুস্থ্য ছিলো সে হাসপাতালে অসুস্থ্য অবস্থায় মারা গেছে তার মৃত্যুর সার্টিফিকেটও রয়েছে।
মৃত ওসমানের বড় ভাই কুরবান আলী বলেন, আমি জেল হাজতে ছিলাম বাড়িতে কেও ছিলোনা তাই মামলা করতে পারি নাই ।মামলা করতে দেরি হয়েছে। আমি আমার ভাইয়ে লাশ ময়না তদন্ত করে সুষ্ঠ বিচারের দাবি করছি ।
ওসমানের স্ত্রী রেহেনা আবেগ আপলুত হয়ে বলেন, আমার স্বামী ভালো লোক ছিলেন জমি নিয়ে ঝগড়া করে তাকে মারা হয়েছে। এখন আমার কেহ নেই । আমার স্বামী কে যারা মেরেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্টেট মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম জানান, কোর্ট এর নির্দেশে লাশ উত্তোলন করে শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হবে । তদন্ত রির্পোট এর ভিত্তিতে আইনী কার্যক্রম চলবে ।