নিজস্ব প্রতিবেদক: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে অনৈতিক কাজের অপবাদ দিয়ে এক নারীকে (৩৬) সমস্ত শরীর বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে একদল সন্ত্রাসী যুবক।

রোববার (০৪ অক্টোবর) দুপুর থেকে নির্যাতনের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে জেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।টনক নড়ে প্রশাসনের। ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আবদুর রহিম (২৪) নামের এক যুবককে আটক করেছে।সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে একলাশপুর থেকে আবদুর রহিমকে আটক করা হয়। তিনি জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের শেখ আহম্মদ দুলালের ছেলে।তিনি স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারের সেকেন্ড ইন কমান্ড বলে জানিয়েছে পুলিশ।এদিকে নির্যাতনকারী সন্ত্রাসীদের ভয়ে ঘরে তালা দিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন নির্যাতিত নারী ও তার পরিবারের লোকজন।জানা গেছে, গত তিন বছর আগে ওই নারীর বিয়ে হয়।বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে তার স্বামী আরেকটি বিয়ে করলে তাদের মধ্যে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে আগের স্বামী ওই নারীর সঙ্গে দেখা করতে তার ঘরে প্রবেশ করেন।বিষয়টি দেখতে পায় স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার।গতকাল রাত ১০টার দিকে দেলোয়ার তার লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করেন।পর পুরুষের সাথে অনৈতিক কাজ করেছে বলে অভিযোগ এনে তাকে মারধর শুরু করেন।একপর্যায়ে পিটিয়ে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারন করা হয়।ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে যা দেখা যায় – ভিডিওতে দেখা যায়, নির্যাতনকারীদের মধ্যে এক যুবক নারীর পরনে থাকা জামাকাপড় টেনে-হিঁচড়ে সম্পূর্ণ খুলে ফেলে।এ সময় ওই নারী বিছানার চাদর, তোষক, খাটের ওপর থাকা বিভিন্ন কাপড় দিয়ে নিজের দেহ ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করেন।কিন্তু নির্যাতনকারীদের মধ্যে কয়েকজন চারদিক থেকে কাপড়গুলো টেনে সরিয়ে দেয়।এক যুবক নারীর মুখে বারবার লাথি মারে। একজন তার মুখ ও বুকের বিভিন্ন স্থানে কামড় দেয়।এক যুবক নারীর গোপনাঙ্গে বারবার হাত দেয় ও আঘাত করে। আরেক যুবক তার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে।নির্যাতনকারীদের বারবার বাবা ডেকেও রক্ষা পাননি ওই নারী।ভিডিওটি দেখে একাধিক ব্যক্তি জানান, এই নির্যাতন মধ্যযুগীয় কায়দার নির্যাতনকেও হার মানিয়েছে।স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও তার সঙ্গীয় বাদল, কালাম, সাইফুদ্দিন, রহিম ও সুমনসহ ৬-৭ জন ওই নারীর ওপর এ নির্যাতন চালিয়েছে বলে তারা জানান।নির্যাতনকারী দেলোয়ার ও তার বাহিনীর লোকজনের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।