পাকার আগেই শেষ হচ্চে গাছের তাল

মোঃ আব্দুর রহীম মিঞা, ভূঞাপুর ঃ জৈষ্ঠ্য মাস মধু মাস আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়ে এসেছে আষাড় মাস । এ মাসে রোঁদ বৃষ্টির দোঁলা-চলে শুরু প্রচন্ড ভেপসা গরম।

এ ভেপসা গরমে পথচারীদের তৃষ্ণা মিটাতে এখনও চলছে তালের শাঁস বা বীজ বিক্রির ধুম। তীব্র তাপদাহে এক একটি তালে শাঁস বা বীজ খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছে শিশু থেকে আবাল-বৃদ্ধ পর্যন্ত জন সাধারণ । পৌষ-মাঘ মাসে যখন তাল গাছে তালের ছড়া আসে তালের ছড়া বা কাদিগুলো তাল পাতার চারিদিক ঝুলতে থাকে তখন গাছের সৌন্দর্য থাকে অপরুপ। এ দেশে ছয়টি ঋতুর মধ্যে গ্রীষ্ম ঋতুর জেষ্ঠ্য মাসকে বলা হয় মধু মাস। এই মাসের অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য হচ্ছে হরেক রকমের সুস্বাদু ফল এই মাসেই পাওয়া যায়। আম,জাম, লিচু,কলা, জাম, জামরুল, আনারস, টবেরি,লটকন, কামরাঙ্গা, কাঁঠাল, ড্রাগন,পেঁয়ারা, খেঁজুর,আপেল,কমলা, আঙ্গুরসহ নানা রকম ফল। আর তাল ফল পরিপক্ক হয় ভাদ্র মাসে। এ তাল পরিপক্ক হওয়া তিন মাস আগে থেকে কিছু গাছ মালিক ও অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় কাঁচা তাল কেটে বিচি বা শাঁস বিক্রী শুরু করে। যার কারণে ভাদ্র মাসে গ্রাম-বাংলায় তালের পিঠা খাওয়ার যে দুম পড়ত আজকাল তা আর চোখে পড়ে না। সে সময় যৎ সামান্য তাল পাওয়া যায়, উচ্চ মুল্য হওয়ায় অনেকেই তা কিনতে চায়না। তালের শাঁসের নরম অংশটি খুবই সুস্বাদু । প্রচন্ড গরমে তালের এই শাস মানুষের কাছে খুবই প্রিয়। গরমে অস্থির পথচারীদের এক মুহূর্তেও জন্য হলেও তৃষ্ণায় স্বস্তি এনে দিচ্ছে বলে তারা মনে করে। চলতি পথে প্রচন্ড গরমে মানুষের পিপাসার ভাব হলে পানির বদলে তালের শাঁসের মাঝে খোঁজে পায় তৃষ্ণা নিবারন। অপরিপক্ক তালের শাঁসে জলীয় অংশ বেশি থাকায় এবং তুলতুলে হওয়ার খেতে সুস্বাদু বলে মনে করেন ক্রেতারা। ফলে অপরিপক্ক তাল অসময়ে শেষ হচ্ছে গাছ থেকে।
সরেজমিনে ২০ জুন সোমবার ভূঞাপুরে শহর অলি-গলিতে দেখা যায় এক-দুই মাস পরে যে তাল পেঁকে রসালো ফল হিসাবে বাজারে বিক্রি হবে সে তাল এখনও কাঁচা বীজ বা শাস হিসাবে বিক্রি হচ্ছে। ছোট বড় প্রকার ভেদে প্রতিটির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রি হয় । একেক তালে প্রকার ভেদে ৩ থেকে ৪ টি বিচি দেখতে পাওয়া যায়।
ভূঞাপুর উপজেলা সদর এলাকায় তাল শাঁস বিক্রেতা জীবন পাল বলেন , গ্রাম এলাকা ঘুরে গাছ থেকে সরাসরি কাঁচা তাল সংগ্রহ করে খুচরা রাস্তায় বসে বিক্রি করা হয়। গাছ থেকে তাল ক্রয় খরচ ২ থেকে ৩ টাকা পড়ে । আর পাবলিকের কাছে প্রতিটি তাল ১৫ থেকে ২০ টাকা বিক্রি করা হয়।
আরেক তাল শাঁস বিক্রেতা মোঃ ইবরাহীম বলেন আমাদের দেশে এখন প্রচুর তাল গাছ আছে তালও ধরে প্রচুর আর পাকা তালের চেয়ে কচি অবস্থায় তালের শাঁস খেতে মানুষ পছন্দ করে বেশি । মানুষের চাহিদাও প্রচুর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ হুমায়ন কবীর বলেন দেশে এখন প্রচুর তাল গাছ আছে তালও ধরে প্রচুর । আগে থেকে কাঁচা তাল কেটে শাঁস বিক্রি না করলে পরে পেঁকে গেলে প্রচুর তাল নষ্ট হয় । এ সময় তাল শাঁস বিক্রি করলে গাছ মালিক যেমন লাভবান হয় তেমনি বিক্রেতাও আর্থিকভাবে লাভবান হয়। পাঁকা তাল বেশি দিন রাখাও যায় না। তিনি আরো বলেন পাঁকা অবস্থার চাইতে কাঁচা তালের বিচির পুষ্টি গুন অনেক বেশি। পাকা অবস্থায় তালের বিচি খুবই শক্ত হওয়ায় খাওয়া অনপযুগী হয়ে যায়।

পরিচিতি Ibrahim Bhuiyan

এটাও চেক করতে পারেন

কালিহাতিতে ২ ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক নিহত আহত-২

নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে জহিরুল ইসলাম (৩০) নামে এক চালক নিহত …

Leave a Reply

Your email address will not be published.