মোঃ আব্দুর রহীম মিঞা, ভূঞাপুর ঃ স্থানীয় সরকারের প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ স্তরের একটি স্তর ইউনিয়ন পরিষদ।

এই ইউনিয়ন পরিষদের সকল স্তরের নাগরিককে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে প্রায়ই যেতে হয় চেয়ারম্যান-সচিবের কাছে। শিশু জন্ম মৃতুুর নিবন্ধন থেকে শুরু করে গ্রাম্য বিবাদ সালিশিসহ প্রায় সকল কাজগুলো সারতে যেতে হয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-সচিবদের কাছে। এমনিতেই সরকারী – বেসরকারী কাজে জনসাধারণকে বিভিন্ন রকম সমস্যা সমুক্ষিন হতে হয় অহর্ণিশ । নানা অজুহাতে ধারে ধারে ঘুরতে হয় দিনে পর দিন। এতসব সমস্যার মধ্যেও ফলদা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সপ্তাহে ১ দিন অফিস করেন বলে জানান এলাকার ভোক্তভোগিরা। এমনিতেই সরকারী ছুটি সপ্তাহে দুদিন থাকায় ভোক্তেেভাগি জন সাধারনের দুঃখের সীমা নেই । তার মধ্যে যদি সচিব সপ্তাহে ১ দিন অফিস করেন তাহলে ইউনিয়ন পরিষদ চলে কিভাবে এমন প্রশ্ন করেন সাধারণ জনগন।
এ বিষয়ে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় মঙ্গলবার (২৬এপ্রিল ) সচিব মোঃ সামাউন কবির অফিসে আসেন নাই । তার কক্ষে গিয়ে দেখা যায় তার চেয়ারে পাবলিক বসে আছেন। তাকে সচিব বলে সম্বোধন করলে তিনি বলেন আমি নই, সচিব অফিসে আসে নাই । তাহলে আপনি কে সচিবের চেয়ারে ? তিনি পরিচয় দেন মোঃ মজিবর রহমান আমার গ্রাম ধুবলিয়া। তার কাছে জানতে চাইলে আপনি সচিবের চেয়ারে বসে আছেন কেন । তিনি বলেন সচিব নাই চেয়ার খালি পাইছি তাই তার চেয়ারে বসেছি। সচিব না থাকলে তার চেয়ারের যে কেউ বসতে পারে ? তিনি আর কোনো কথা না বলে উঠে চলে যান।
ধুবলিয়া এলাকার বাসিন্দা মোঃ আব্দুল খালেক বলেন সচিব ইচ্ছা হলে আসে ইচ্ছে না হলে পরিষদে আসে না। সঠিক সময় অফিসে না আসায় দিনে পর দিন পরিষদে সেবা নিতে আসা মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে প্রতিদিন। তিনি আরো বলেন বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীসহ তাদের পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধ প্রদান করা । এই জন্ম নিব্ধন করতে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের ঘুরতে হয় দিনের পর দিন মাসের পর মাস। এর মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের সার্ভার জঠিলতার শেষ নেই। তার মধ্যে সচিব সপ্তাহে ১ দিন আসায় ভোগান্তির শেষ নেই সেবা নিতে আসা জনসাধারণের। তাছাড়াও কোন না কোন কাজে সচিবের কাছে আসতে হয়। সে না আসলে সব কাজ পড়ে থাকে টেবিলে।
ইউনিয়ন পরিষদের উদ্ঘোক্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন সচিব সপ্তাহে ১ দিন আসায় চরম ভোগাত্তির শিকার হচ্ছে মানুষ। এভাবে কাজ করে মজা পাওয়া যায় না। কাজ করে দেব পাবলিক কাজ সেরে খুশি মনে চলে যাবে। এভাবে দিনের পর দিন হয়রানি হলে তারা বিরক্ত হয়।
ফলদা ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল খান বলেন তিনি নিজে তো আসেন না, যাও সপ্তাহে এক দিন আসেন জন্ম নিবন্ধ ফি নেন ২০০ টাকা। আবার মৃত্যু সনদ- জন্ম সনদ- জন্ম নিবন্ধ মিলে নেন ৪০০ টাকা। তার পর ঘুরতে হয় দিনের দিনের দিন। এই হলো ফলদা ইউনিয়ন পরিষদের অবস্থা।
সচিব মোঃ সামাউন কবির নিয়মিত অফিসের না আসার বিষয় জানতে চাইলে তিনি অভিয়োগ অস্বীকার করে বলেন নিয়মিত অফিসে আসি। যদি পারিবারিক কোন সমস্যা থাকে তখন এদিক সেদিক হয় বলে মোবাইল ফোন কেটে দেন।
ফলদা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সাইদুল ইসলাম তালুকদার দুদু জানান সচিবে সঙ্গে আমি পারতেছিনা, আপনারা সচিবের বিরোদ্ধে যা পারেন নিউজ করেন । প্রতিনিয়ত সচিব ছাড়াই কাজ সারতে হচ্ছে আমাকে। নিয়মিত সচিব অফিস না করলে কাজের গতি থাকে না । কাজও সঠিক সময়ে শেষ করা যায় না। আমি তার বিষয়ে অতিষ্ঠ।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ ইসরাত জাহান বলেন বিষয়টি আমার জানা নেই । খোজ খবর নিয়ে সঠিক তথ্য জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।