নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলে মানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছে ‘টাঙ্গাইল স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন’ (টিএসএফ) নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটি নিয়মিতই নানা রকম সেবামুলক কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে। কোন ধরণের সাহায্য-সহযোগীতা ছাড়াই নিজেদের দৃঢ় মনোবল ও প্রচেষ্টা দ্বারাই মানবতার সেবায় রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। এই সংগঠনটি এখন মানুষের অন্তরে যায়গা করে নিয়েছে।

টাঙ্গাইল স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক তানভীর হাসান খান রুবেল বলেন, ‘সম্পূর্ণ সেবামুলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজ করার জন্যই এই প্রতিষ্ঠানের সূচনা হয়।এটি একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান আমরা কতিপয় কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ স্বেচ্ছাসেবী মিলে প্রতিষ্ঠা করি এই প্রাণের সংগঠনটি। তখন থেকেই দুঃস্থ্য, অসহায়, হতদরিদ্রদের সেবায় কাজ করছে সংগঠনটি। শহরের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মানবতার দেয়াল তৈরি করে অসহায় দরিদ্র সেবায় কাজ করে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও পরিবেশ রক্ষায় এবং মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ করছেন তারা। প্রতি বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে এই সংগঠণটি। নি¤œ আয়ের মানুষদের শীতের সময় শীতবস্ত্র বিতরণ, মেধাবীদের বই বিতরণ করা হয়ে থাকে। তিনি আরও বলেন, আমরা বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপনের পাশাপাশি ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতনসহ বিভিন্ন সামাজিক বৈষম্য মোকাবেলায় সচেতনতামুলক প্রচারণা চালিয়ে থাকি। অপরদিকে পরিবেশ রক্ষায় গাছের চারা রোপন ও বিতরণ, পথ শিশু, শ্রমিকদের মাঝে খাবার ও পোশাক বিতরণ। রমজান মাসে ইফতার বিতরণ, করোনাকালে আর্থিক ও খাদ্য সহায়তা, স্বাস্থ্য উপকরণ বিতরণসহ নানাবিধ সেবামুলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।আমরা আমাদের নিজের প্রয়োজনীয় টাকা থেকে কিছু অংশ সংগঠনে জমা রাখি। সেই টাকা দিয়েই এ ধরণের সেবামুলক কাজ করা হয়ে থাকে।’ টাঙ্গাইল স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা আমাদের পড়াশোনা ও অন্যান্য কাজের পাশাপাশি এই সংগঠনে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করে থাকি। একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির মাধ্যমে এই সংগঠনটি পরিচালিত হয়ে থাকে। ফাউন্ডেশনে ৬০ জন নিয়মিত সদস্য রয়েছে। ৩৯ সদস্যের একটি কমটি ও ১২ সদস্যের একটি উপদেষ্টা কমিটি রয়েছে। আমরা কারো কাছে কোন সাহায্য চাই না, তবে কেউ সহযোগীতা করলে আমরা তা গ্রহণ করে থাকি।সংগঠনের সাধারন সম্পাদক মুহিদুল ইসলাম মহিদ বলেন, ‘জরুরী ভিত্তিতে কারো রক্তের প্রয়োজন হলে আমরা নিজেরা বিনামূল্যে দিয়ে থাকি। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৯শ’ মানুষকে আমরা বিনামূল্যে রক্ত দিয়েছি। এ ছাড়া বিনামূল্যে কয়েক হাজার মানুষের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করেছি। মানবতার দেয়ালের মাধ্যমে হতদরিদ্রকে সহযোগীতা ছাড়াও দরিদ্র পরিবারের মেয়ের বিয়ে ও পড়াশোনায় আমরা সহযোগীতা করে থাকি। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে এভাবে অন্তত দশ হাজার মানুষকে আমরা বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা করেছি। আমাদের এই প্রচেষ্টা নিয়মিত চলছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।সংগঠণের উপদেষ্টা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আকনুর রহমান বলেন, ‘সরকারের সকল উন্নয়ন পরিকল্পনার সাথে এ ধরণের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো একযোগে কাজ করলে উন্নয়নগুলো ফলপ্রসূ হয়। টাঙ্গাইল স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন যেটা করছে এ জন্য তাদেরকে সাধুবাদ জানাই। তাদের সহযোগীতায় আমাদের কিছু করণীয় থাকলে তা অবশ্যই করা হবে। ভাল থাকুন সুস্থ্য থাকুন মহামারি করোনা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন। মাক্স পড়ুন এবং নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন।সংগঠনের উপদেষ্টা বিপ্লব দত্ত পল্টন ও খন্দকার রাশেদুল আলম রাশেদ বলেন, টাঙ্গাইল স্বেচ্ছাসেবী ফাউন্ডেশন যেটা করছে এ জন্য তাদেরকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তাদের প্রতিটা কাজে আমাকে পাশে পাবে ইনশাআল্লাহ। আমি আমার দিক থেকে যত টুকু পারি সংগঠণকে সহযোগীতা করবো। একঝাঁক যুবক যেভাবে নিজেদের সেবায় আত্মনিয়োগ করছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।মো. আল হাদী তালুকদার বলেন, ‘তরুণ এই যুবকদের উৎসাহ দিতেই আমি তাদের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছি। তারা নিজেদের চেষ্টায় মানবতার সেবায় যে ভাবে আত্মনিয়োগ করছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। তাদেরকে কোন ভাবে সহযোগীতা করতে পারলে আমিও বেশ আনন্দ অনুভব করি।