নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলে প্রকাশ্যে তামাক জাতীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে দেখা যাচ্ছে। ফলে দিন দিন শিক্ষার্থীরা ধুমপানসহ মাদকাসক্তের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। প্রকাশ্যে তামাক জাতীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রদর্শনে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না কোম্পানী গুলো। বৃহস্পতিবার টাঙ্গাইলের মাহমুদুল হাসান কলেজ, বিবেকানন্দ হাইস্কুল এন্ড কলেজ, সরকারি এমএম আলী কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশে পাশের দোকানগুলোতে তামাক জাতীয় পণ্যের বিজ্ঞাপনের পদর্শণ লক্ষ্য করা গেছে।

এতে করে শিক্ষার্থীরা অতি সহজেই হাতের কাছে সিগারেটসহ ধূমপানীয় পণ্য পাচ্ছে। অন্যদিকে টাঙ্গাইলে এক রঙা টি শার্ট, ভ্যান গাড়িসহ নানা বিজ্ঞাপন সামগ্রী নিয়ে ঘুড়ে বেড়াতেও দেখা যায় বিক্রয় প্রতিনিধিদের। বিশেষ করে জাপান টোবাকো ইন্টারন্যাশনাল (জেটিআই) ও ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো কোম্পানীসহ বিভিন্ন কোম্পানীকে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে দেখা যায়। বাংলাদেশের সিগারেট বাজারে প্রবেশের পর থেকে প্রচারণা মূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে বাজার দখলে মরিয়া হয়ে উঠছে দুরপ্রাচ্যের এ কোম্পানীগুলো।

ধুমপান ও তামাকজাত পণ্য (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৫ ধারা অনুযায়ি প্রত্যক্ষ্য বা পরোক্ষভাবে কোন তামাকজাত পণ্য বা তামাকের ব্যবহার প্রদর্র্শনের উদ্দেশ্যে যেকোন ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা নিষিদ্ধ এবং দন্ডনীয় অপরাধ। কোন ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠান আইনের এ বিধান লঙ্ঘন করলে অনুর্ধ্ব তিন মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড বা অনধিক এক লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। তবে বিদ্যমান আইনি বিধি নিষেধ এগিয়ে আগ্রাসী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে জেটিআইসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানী। এদিকে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্গন করে জেটিআই এর আগ্রাসী প্রচারণা বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। একাধিক ব্যক্তি দাবি জানিয়েছেন, সরকার যেখানে দেশের তরুণ সমাজকে মাদক ও তামাক থেকে দূরে রাখতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে, সেখানে প্রকাশ্যে তামাকের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে কোম্পানীগুলো কিশোর, তরুণসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষকে নেশার প্রতি আকৃষ্ট করছে।
এ বিষয়ে তামাক বিরোধী টাঙ্গাইলের প্রবীণ দৌড়বিদ মির্জা শাহজাহান বলেন, আমি একটানা প্রায় ২০ বছর ধুমপান করেছি। ধুমপানে কোন প্রকার আমার লাভ হয়নি। তাই আমি ধুমপান ছেড়ে দৌড় শুরু করেছি কয়েক বছর যাবত। এখন আমাকে নিজের কাজে প্রবীণ নয় নবীন মনে হয়। আমার ৬৬ বছর হলেও নিজেকে ১৮ বছরের যুবক মনে হয়। আমি এখন ধূমপায়ীদের ধূমপান করতে মানা ও ধূমপান থেকে দূরে সরে আসার আহ্বান জানাই। রাস্তা ঘাটে সিগারেটের পট্টি দেখলে আমি তা কুড়িয়ে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দেই। তিনি আরও বলেন, জেটিআই বা টোবাকো কোম্পানীর মতো যারা শহরে প্রকাশ্যে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে তরুনদের আকৃষ্ট করছে সেইসব কোম্পানীর বিজ্ঞাপন প্রদর্শণ বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, টাঙ্গাইলে প্রকাশ্যে তামাক জাতীয় পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করলে প্রয়োজনীয় প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।