টাঙ্গাইল- ২ আসনে আওয়ামীলীগ চায় ধরে রাখতে বিএনপির চেষ্টা পুনরুদ্ধার
আব্দুল আলিম:টাঙ্গাইলের-৮ টি আসনের মধ্যে টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটি আসন। এ আসনে যে দলের প্রার্থীই নির্বাচিত হন সে দলই ধারাবাহিকভাবে সরকার গঠন করে আসছে।স্বাধীনতার পর থেকে এ আসনে আওয়ামীলীগ,বিএনপি ও জাতীয় পার্টির বিভিন্ন প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। ১৯৯১সালে আওয়ামীলীগ প্রার্থী মো. হাতেম আলী তালুকদারকে ১৯ হাজার ২ ভোটের ব্যবধানে, ৭৫ হাজার ৬ ০৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন বিএনপির প্রার্থী এড্ভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু। এর আগে চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. শামছুল হক তালুকদার ছানু। ১৯৯৬ সালে বিএনপির প্রার্থী এড্ভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টকে হারিয়ে ৭৭হাজার ৮৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন আওয়ামীলীগের প্রার্থী সাবেক সচিব খন্দকার আসাদুজ্জামান। সে সময় তিনি তৎকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রীর মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্থাপন বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে আবার আওয়ামীলীগের প্রার্থী খন্দকার আসাদুজ্জামানকে পরাজিত করে ১ লাখ ৫ হাজার ২৭৩ ভোট পেয়ে বিএনপির প্রার্থী এড্ভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু বিজয়ী হন। সে সময় তিনি বিএনপি সরকারের উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জেলে থাকায় তত্বাবধায়ক সরকার বিএনপির এডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টুকে অযোগ্য ঘোষনা করলে, মূল প্রতিদদ্ধিতা হয় আওয়ামীলীগের প্রার্থী খন্দকার আসাদুজ্জামান ও বিএনপির প্রার্থী এডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টুর ছোট ভাই তৎকালীন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর মধ্যে। এ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীকে পরাজিত করে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৭১০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন আওয়ামীলীগের প্রার্থী খন্দকার আসাদুজ্জামান। বিএনপির প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু পান ১ লাখ ৩ হাজার ৫০৯ ভোট। ২০১৪ সালেরও আওয়ামীলীগের প্রার্থী খন্দকার আসাদুজ্জামান বিনা প্রতিদ্বদ্ধিতা এমপি হন।
২১আগষ্ট গেনেট হামলা মামলায় বিএনপির সাবেক মন্ত্রী এডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টু সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় এবারও বিএনপির মনোনীত প্রার্থী যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। অপর দিকে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তানবীর হাসান (ছোট মনির)। বহুল আলোচিত মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার আসামি এমপি রানাসহ তার ভাইদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আলোচিত নেতায় পরিনত হন জার্মানি প্রবাসী তানবীর হাসান (ছোট মনির)। সাংগঠনিক কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্র্র্র্যোগ ও বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে তাকে কাছে পেয়েছেন স্থানীয়রা। এ ব্যপারে ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের যগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান শাহীনুল ইসলাম তরফদার বাদল জানান,ভূঞাপুর-গোপালপুরের মানুষের চাহিদা ও জন সমর্থন বিবেচনা করেই আওয়ামীলীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথাপোযুক্ত তানবীর হাসান (ছোট মনির)কে মনোনয়ন দিয়েছেন। আওয়ামীলীগ সরকারের গতিশীল উন্নয়ন ও তার কর্মকান্ডের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই তিনি জন গনের মন জয় করে নিয়েছেন। আমরা আশা করছি প্রতিি ভোট কেন্দ্রেই তিনি প্রথম হবেন। তার কোন প্রতিদ্বদ্ধী থাকবে না। নির্বাচনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী তানবীর হাসান (ছোট মনির) বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবেন।
অপর দিকে বিএপির প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ১৩৯ মামলার বোঝা নিয়ে দীর্ঘ ৬ মাস যাবত কারাগারে রয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতে নির্বাচনী কাজ করছেন নেতা কর্মীরা। এ ব্যপারে ভূঞাপুর থানা বিএনপির সভাপতি এড্ভোকেট গোলাম মস্তফা জানান, ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত জেনে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা আমাদের মাঠে দাড়াতে দিচ্ছে না। নির্বাচনী কাজ যাতে না করতে পারি সে জন্য তারা বিভিন্ন ভাবে আমাদের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা করছে। প্রকাশ্য দিবালোকে আমাদের পোষ্টার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে। এ ব্যপারে নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। সুষ্ঠ নির্র্বাচন হলে বিএনপি প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবেন।
আওয়ামীলীগ বিএনপির পাশাপাশি এ আসনে অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন, জাকের পার্টির (গোলাপ ফুল) এনামুল হক মন্জু, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের (হাত পাখা) এস,এম,শামছুর রহমান, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের (কুলা) মনিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির (কাস্তে) মো. জাহিদ হোসেন খান।
টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনটি ২ টি পৌরসভা ও ১৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪২ হাজার ৪২৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭৩ হাজার ৩৯ জন।
আপনার মতামত লিখুন