বিলুপ্তির পথে ভূঞাপুরের ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্প

মামুন সরকার, ভূঞাপুর প্রতিনিধিঃ কালের পরিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী মৃৎ শিল্প। পৃষ্ঠপোষকতা ও বিভিন্ন সমস্যার কারণে আজ সংকটের মুখে এই মৃৎ শিল্প। টাঙ্গাইলের প্রায় শত বছরের ঐতিহ্য বহন করা ভূঞাপুরের মৃৎ শিল্প আজ বিলুপ্তির পথে। দেশ ডিজিটাল যুগে পদার্পণ করায় এ্যালুমেনিয়াম, মেলামাইন ও প্লাষ্টিকের তৈরি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের ব্যাবহার বেড়ে যাওয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে মাটির তৈরি মৃৎ শিল্পের সাংসারিক বিভিন্ন ধরণের উপকরণ ও ব্যাবহার। এমনকি বিজ্ঞানের জয়যাত্রা, প্রযুক্তির উন্নয়ন ও নতুন নতুন শিল্প সামগ্রীর প্রসারের কারণে ও অনুকূল বাজারের অভাবে এ শিল্প আজ হুমকির মুখে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মতো এখানেও নিয়োজিত মৃৎশিল্পিদের অধিকাংশ পাল সম্প্রদায়ের। এক সময় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কয়েকশ পাল পরিবার পত্যক্ষভাবে এ শিল্পের সাথে জড়িত ছিল। আধুনিকতার ছোঁয়ায় কালের পরিক্রমায় মাত্র ৪০/৫০টি পরিবার তাদের পূর্বপুরুষদের এ পেশাকে ধরে রেখেছে অনেক কষ্টে। বর্তমানে এদের অবস্থা খুবই নাজুক। এখন নুন আনতে পান্তা ফুরাচ্ছে তাদের। এমনটি জানিয়েছেন গোবিন্দাসী, নিকরাইল ও ফলদা ইউনিয়নের পালপাড়ার বাবু পাল, জীবন পাল, পবন পাল, কুড়ান পাল, ললিতা পাল, সূচি পাল সহ অনেকে। তারা জানান একসময় মাটির তৈরি হাড়ি, পাতিল, কলসি, রঙিন ফুলদানি, ফুলের টপ, হাতি, রঙ্গিন ঘোড়া, নানা রঙের পুতুল ও বাচ্চাদের বিভিন্ন ধরনের খেলনা সামগ্রী হাট বাজার ও গ্রামে গ্রামে বিক্রি করে অনেক লাভবান হতাম। মিটাতাম সংসারের চাহিদা, দেখতাম সোঁনালী স্বপ্ন। কিন্তু এখন প্লাস্টিক ও এ্যালুমেনিয়ামের চাপে হারিয়ে ফেলেছে তাদের স্বপ্ন। নিদারুন অর্থকষ্টে কাটছে তাদের দিনকাল। তারা এখন জীবিকার জন্য তাদের পূর্বপুরুষের পেশা ছেড়ে অন্য পেশা খুজছে। গোবিন্দাসী ইউনিয়নের সুশীল পাল বলেন, এ পেশায় নেই সরকারি কোন সহায়তা লোন ও প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা। বাধ্য হয়ে গুটিয়ে নিয়েছি আদি ও পূর্ব পূরুষের পেশা।বাধ্য হয়ে বেচ্ছে নিতে হচ্ছে অন্য পেশা।

ভূঞাপুরের মৃৎ শিল্পিরা বলেন, বর্তমানে মাটির দাম বেশি হওয়ায় তাদের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে। তার উপরে বাজারে মাটির পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় তাদের এই ব্যবসা এখন হুমকির মুখে পড়েছে। তারা এই ব্যবসা ধরে থাকবে কিনা এ নিয়ে নিজেরাই সংশয়ে রয়েছে । তার পরেও তাদের ধারণা সরকারের বিসিক বা অন্য কোন সংস্থা যদি তাদের সহযোগিতা করে তাহলে তারা আবার নতুন করে ঘুরে দাঁড়াবেন বলে জানালেন ভূঞাপুরের মৃৎ শিল্পিরা।

পরিচিতি ইব্রাহীম ভূইয়া

এটাও চেক করতে পারেন

ভূঞাপুর অঞ্চল কিন্ডারগার্টেন বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে “ভূঞাপুর অঞ্চল কিন্ডার গার্টেন” বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৩ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Sahifa Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.