ভূঞাপুরে ভবন নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম, শেষ না হতেই ধ্বস
মামুন সরকার ভূঞাপুর প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভবন নির্মানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নির্মান কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে অত্যান্ত নিম্নমানের সামগ্রী। কাজ শেষ না হতেই ধ্বসে পড়েছে ভবনের একাংশ। এক তলা এ ভবনের নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৮ লাখ ৯৩ হাজার ৫২৯ টাকা। নিয়মানুযায়ী কাজ না হওয়ায় এমন অবস্থা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে চার তলা ফাউন্ডেশন করে প্রথম তলার কাজের জন্য গত বছরের আগষ্টে দরপত্র আহবান করা হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৭৮ লাখ ৯৩ হাজার ৫২৯ হাজার টাকা। কাজটি পায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার মেসার্স জিএস এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। জিএস এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধীকারি গোলাম সরোয়ার খান কাজের দায়িত্ব দেন তারই ছোট ভাই জাহাঙ্গীর খানকে। গত বছরের নভেম্বরে ভবনটির নির্মান কাজ শুরু হয়। সিডিউল অনুযায়ী ১৮০ দিনে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও পরবর্তীতে তা বৃদ্ধি করা হয়। প্রথম দিক থেকেই ভবন নির্মানে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ শুরুর অভিযোগ উঠে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এ জন্য এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকবার বন্ধ করে দেন নির্মান কাজ। তারপরও অদৃশ্য কারনে আবার শুরু হয় সেই কাজ। কয়েকদিন আগে কাজ চলমান থাকাবস্থায় ধ্বসে যায় বারান্দাসহ ভিতরের ফ্লোর। তারপরও নয়ছয় করে চালিয়ে যেতে থাকে কাজ। অনিয়মের বিষয়টি এলাকাবাসী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নজরে আসলে তারা কাজ বন্ধ করে দেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এমন অনিয়মে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ এলাকাবাসীর মাঝে বিরাজ করছে চরম ক্ষোভ আর হতাশা। সর্বত্রই বইছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, শুরু থেকে থেকেই ভবন নির্মানে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ শুরুর অভিযোগ উঠে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। জাহাঙ্গীর নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোক এলাকার আত্মীয়স্বজনের অজুহাত দেখিয়ে তা ধামাচাপা দিয়ে দায়সারাভাবেই কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। যার কারনেই কাজ শেষ না হতেই ধ্বসে গেছে। অনিয়ম বন্ধ করে নিয়মানুযায়ী কাজের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তারা।
এ বিষয়ে জিএস ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর খান বলেন, কাজে কোন অনিয়ম হয়নি। সিডিউল অনুযায়ীই কাজ হয়েছে।
ধ্বসে যাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে ভূঞাপুর উপজেলা এলজিইডি অফিসের উপ সহকারি প্রকৌশলী আল মামুন বলেন, ভবন পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। ভবনের উত্তর পাশে ভেঙে নতুন করে কাজ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন