নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ৯০ বছর বয়সী বিধবা নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ২৬ বছর বয়সী এক মাদকাসক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) ভোর রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত যুবক উপজেলার কদিম হামজানী গ্রামের শরিফ উদ্দিনের ছেলে পলাশ মিয়া। এর আগে সোমবার ভোরে উপজেলার দশকিয়া ইউনিয়নের দশকিয়া পালপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, উপজেলার দশকিয়া পালপাড়া গ্রামের ওই বিধবার বাড়ির একটি টিনসেড ঘরে একাই ঘুমাতেন। তার তিন ছেলে আলাদা আলাদা ঘরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকেন। সোমবার ভোরে ওই বিধবার ঘরে ঢুকে পাশের কদিম হামজানী গ্রামের শরিফ উদ্দিনের ছেলে পলাশ মিয়া যৌন নিগ্রহ চালায় ও ঘুষি দিয়ে দাঁত ভেঙে ফেলে। পরে শাশুড়ির গোঙানির শব্দ পেয়ে পাশের ঘর থেকে তার পুত্রবধূ এগিয়ে আসতে চাইলে ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকানো দেখতে পেয়ে চিৎকার দেন। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ওই বিধবাকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। ওই সময় বিধবার দাঁত ভাঙা ও যৌনাঙ্গে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করে। প্রতিবেশীরা জানায়, শরিফ উদ্দিনের ছেলে পলাশ মিয়া একজন মাদকাসক্ত। তিনি মাদকের টাকা জোগার করতে প্রায়ই চুরি- ছিনতাই করে থাকে। মাদকের টাকার জন্য ঘরে ঢুকে বিধবাকে একা পেয়ে পলাশ মিয়া ধর্ষণ করে ও একটি মোবাইল চুরি করে পালিয়ে যায়। পালানোর সময় ওই বিধবার পুত্রবধূ পলাশ মিয়াকে দেখতে পেয়েছেন। ওই বিধবার পুত্রবধূ জানায়, গোঙানির শব্দ পেয়ে তিনি শাশুড়ির ঘরে যেতে চাইলে দরজা বাইরে থেকে আটকানো দেখতে পান। তার চিৎকারে এলাকার লোকজন এসে বাইরে থেকে বাঁধন খুলে দিলে তিনি ও বাড়ির অন্যরা বেড়িয়ে আসেন। এ সময় বাড়ির পাশে একটি গাছের নিচে পলাশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ডাক দিলে পলাশ দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। পরে শাশুড়ির ঘরে গিয়ে তাকে খাটের নিচে পড়ে থাকতে দেখেন। তখন শাশুড়ির গোপনাঙ্গ দিয়ে রক্ত ঝরছিল। টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের গাইনি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সালমা জাহান বলেন, ওই নারীকে ডাক্তারী পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তার গোপনাঙ্গে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। বর্তমানে ওই নারী হাসপাতালের ৩নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দশকিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এমএ মালেক ভূঁইয়া জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। একজন মাদকাসক্ত ৯০ বছরের একজন বিধবাকে ধর্ষণ করে চরম অন্যায় করেছে। কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ওই বিধবার ছেলে বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর জেলা ও কালিহাতী থানা পুলিশের টিম অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে বুধবার দুপুরে তাকে টাঙ্গাইল আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।