গোপালপুরের হেমনগর ডিগ্রী কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগের জনসভা পন্ড

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: গোপালপুরের হেমনগর ডিগ্রী কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনির শনিবারের জনসভাকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকদিন ধরেই চলছিল মাইকিং। সড়কগুলোতে তৈরি করা হয়েছিল দীপু মনির ছবি সম্বলিত আগমনী বার্তার গেট।টাঙ্গাইল-২(গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী স্থানীয় এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামানের ছেলে খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেল এ জনসভার আয়োজন করেন। প্রায় এক লাখ টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হয়েছিল নৌকা মঞ্চ। কিন্তু শুক্রবার হঠাৎ করেই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। জনসভাকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ হন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী তানভীর হাসান ছোট মনির, ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু ও খন্দকার আশরাফুজ্জামান স্মৃতির লোকজন। তারা এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামান ও তার ছেলে খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেলের বিরুদ্ধে শুক্রবার সন্ধ্যায় গোপালপুর পৌর শহরে জুতা মিছিল বের করে। এছাড়াও গোপালপুর ও ভূঞাপুরে নির্মিত তোরণ ও বিলবোর্ড ভেঙে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। দাহ করা হয় এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামান ও তার ছেলে খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেলের কুশপুত্তলিকা। সংঘর্ষের আশঙ্কায় শুক্রবার মধ্যরাতে বন্ধ হয়ে যায় দীপু মনির জনসভা।

সরজমিনে জানা যায়, গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নামে গত ১৩ অক্টোবর উপজেলার হেমনগর কলেজ মাঠে এক নির্বাচনী জনসভা আহবান করা হয়। এতে প্রধান অতিথি করা হয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনিকে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য খন্দকার আসাদুজ্জামান তার পুত্র খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেলকে ওই জনসভায় দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেবে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে দু’উপজেলাতেই। তখন থেকেই ক্ষোভ দানা বাঁধতে থাকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী তানভীর হাসান ছোট মনির, ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু ও খন্দকার আশরাফুজ্জামান স্মৃতির লোকজনের মাঝে। পরে ওই তারিখ পরিবর্তন করে ১৬ই অক্টোবর এবং পরবর্তীতে ১৯ অক্টোবর শুক্রবার নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু দূর্গা পুজার দশমীর কারনে আবারো পিছিয়ে ওই জনসভা পরের দিন শনিবার দুপুর ২টায় করা হয়। জেলা আওয়ামীলীগ কোন্দল নিরসন করতে অপারগতা প্রকাশ করায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মতি ছাড়াই স্থানীয় সংসদ সদস্য খন্দকার আসাদুজ্জামানের একক সিদ্ধান্তে শনিবার জনসভার দিন ঘোষণা দেয়া হয়। এতে আওয়ামী লীগের অপর চার মনোনয় প্রত্যাশীর মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাদের অনুসারি নেতা-কর্মীরা শুক্রবার সন্ধ্যায় গোপালপুর পৌর শহরে জুতা মিছিল বের করে। এছাড়াও গোপালপুর ও ভূঞাপুরে নির্মিত তোরণ ও বিলবোর্ড ভেঙে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। দাহ করা হয় এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামান ও তার ছেলে খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেলের কুশপুত্তলিকা। মঞ্চ পাহাড়ায় নিয়োজিত রাখা হয় পুলিশ। সন্ধ্যার পর থেকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হতে থাকে। দেখা দেয় বড় ধরনের সংঘর্ষের আশঙ্কা। পরে অবস্থার বেগতিক দেখে মধ্যরাতে বন্ধ হয়ে যায় দীপু মনির জনসভা।

এ বিষয়ে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও গোপালপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু বলেন, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য খন্দকার আসাদুজ্জামান নিজ পুত্র মশিউজ্জামান রোমেলকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা দেয়ার জন্য কৌশলে এ জনসভার আয়োজন করেছে। জনগন এ ষড়যন্ত্র মেনে নেবেনা। তাই এ জনসভাকে দলীয় নেতাকর্মীরা প্রত্যাখান করেছে।

অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী ও জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক তানভীর হাসান ছোট মনি বলেন, এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামান জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগকে পাশ কাটিয়ে নিজের অযোগ্য পুত্রকে দলের প্রার্থী হিসেবে কৌশলে ঘোষণা দেয়ার জন্য একজন কেন্দ্রীয় নেত্রীকে ভুল বুঝিয়ে জনসভার আয়োজন করে। জনগন এ ষড়যন্ত্রমূলক জনসভাকে প্রত্যাখান করেছে।

গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হালিমুজ্জামান তালুকদার জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য এ জনসভা চাপিয়ে দিয়েছে। তাই দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ ও চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। সন্ধ্যায় তারা সংসদ সদস্য ও তার পুত্রের বিরুদ্ধে জুতা মিছিল করেছে।

জনসভা পন্ডের বিষয়ে কথা বলতে খন্দকার মশিউজ্জামান রোমেলের সেল ফোনে বার বার কল দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ হাসান আল মামুন বলেন, জনসভার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছিল। কিন্তু আয়োজকরা স্বেচ্ছায় তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

 

পরিচিতি ইব্রাহীম ভূইয়া

এটাও চেক করতে পারেন

বেগম জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার দাবিতে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির অনশন

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Sahifa Theme License is not validated, Go to the theme options page to validate the license, You need a single license for each domain name.