টাঙ্গাইলের যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দূর্নীতির আঁখড়া


নিজস্ব প্রতিবেদক : টাঙ্গাইলের যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র দূর্নীতির আঁখড়া কর্মকর্তাদের দ্বায়িত্ব অবহেলা আর উর্ধ্বতন কর্তাদের দূর্নীতিতে ধ্বংসের পথে সরকারী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। আর এই সকল দূর্নীতির মূল মদতদাতা প্রতিষ্ঠানের ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ মূরশেদুল করিম।নির্ধারিত সময়ে অফিস না করা, কর্মচারীদের কাছ থেকে কমিশনের মাধ্যমে অফিসে উপস্থিত না হয়েও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর গ্রহণ, বিভিন্ন প্রকল্পের সরকারি অর্থ কোষাগারে জমা না দেয়া, শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষর জালিয়াতি সহ বিভিন্ন খাত থেকে কোটি টাকা আত্মসাৎ সহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ মূরশেদুল করিমের বিরুদ্ধে। শুধু ব্যক্তি দূর্নীতি নয়, অদৃশ্য ক্ষমতাবলে তিনি ৯ বছরের দায়িত্বে পুরো প্রতিষ্ঠানকেই গড়ে তুলেছেন অনিময় আর দূর্নীতির আখরা হিসেবে। অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে এমন নানা তথ্য।

জানা যায়, ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি টাঙ্গাইল যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডেপুটি কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন মোঃ মূরশেদুল করিম। তারপর থেকে অদ্যবধি তিনি এই দায়িত্ব পালন করছেন। দীর্ঘ নয় বছরে তিনি এই প্রতিষ্ঠানে গড়ে তুলেছেন অদৃশ্য বলয়। গত ৯ বছরে তিনি ৩৬ টি ব্যাচের দায়িত্ব পালন করেছেন। আর এই দীর্ঘসময়ে তিনি প্রতি ব্যাচ থেকে গড়ে ৩ লাখ টাকা করে সব মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি ৮ লাখ টাকা আত্মাসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।জানা যায়, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র টাঙ্গাইলে তিন (০৩) মাস মেয়াদি ‘গবাদিপশু, হাঁসমুরগি পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা, মৎস্য চাষ ও কৃষি বিষয়ক’ কোর্সের প্রশিক্ষণের নিয়মাণুযায়ী কোর্সটি সম্পূর্ণ আবাসিক, বিধায় কোর্সে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠানের সীমানার ভিতরে অবস্থিত হোস্টেলে অবস্থান বাধ্যতামূলক। প্রশিক্ষণ কোর্সটি আবাসিক থাকায় হোস্টেলে অবস্থানকারীদের কেন্দ্রের নিয়মানুসারে প্রশিক্ষণ ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে। আবাসিক হোস্টেলে অবস্থান না করলে ভাতার টাকা প্রদান করা হয় না।সরকারি এই সব নির্দেশনা উপেক্ষা করেই প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতার টাকা দৈনিক ১০০ টাকা খাবারের জন্য দেওয়া হলেও সেখানে তাদেরকে দেওয়া হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা। প্রশিক্ষণের ভাতা বিল কোর্স শেষ হওয়ার ৩ মাস পর সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর থেকে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়। আরও জানা যায়, প্রথম সাময়িক ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকলে নিয়মাণুযায়ী প্রশিক্ষণার্থীকে ড্রপ আউট করার বিধান থাকলেও তা মানা হচ্ছে না এই প্রতিষ্ঠানে। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৯৬ তম ব্যাচে ৭৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও সবাই নিয়মিত হোস্টেলে ছিল না। এদের মধ্যে অনেক প্রশিক্ষণার্থী পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল। নিয়মাণুযায়ী পরপর তিন দিন ক্লাস না করলে প্রশিক্ষণার্থীকে বহিস্কার করার বিধান রয়েছে। তারপরেও নিজের স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ মূরশেদুল করিম প্রশিক্ষণার্থীদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে সকলের টাকাই উত্তোলন করেছেন। সেই সাথে উত্তোলনকারী প্রশিক্ষণার্থী সকলের নামেই সার্টিফিকেট ইস্যু করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ৯৬ তম ব্যাচের ভাতা বিলের স্বাক্ষরের সাথে প্রশিক্ষণার্থীদের ভর্তি ফর্মের স্বাক্ষরের গড় মিলও পাওয়া গেছে। প্রতিমাসেই প্রশিক্ষণার্থীদের উপস্থিতির পরিসংখ্যান ও ড্রপআউট এর তালিকা প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করার নিয়ম থাকলেও তা করা হয় না তারই নির্দেশে।গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ১০ মার্চ পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানে তিন (০৩) মাস মেয়াদি ‘গবাদিপশু, হাঁস মুরগি পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা, মৎস্য চাষ ও কৃষি বিষয়ক’ প্রশিক্ষণ কোর্সের ৯৬ তম ব্যাচে প্রশিক্ষণ করানো হয়। সেখানে মোট ৭৩ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। এর মধ্যে আবাসিকে মোট ৪০ জন শিক্ষার্থী থাকে। বাকী ৩৩ জন অনাবাসিক হিসেবে নিজেদের আবাসস্থল থেকে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ক্লাস করেন। সেখানেও ভাতা বিলে আবাসিক ছাত্রদের হোস্টেলে উপস্থিত অনুসারে টাকার অংক ও দিনের সংখ্যা না বসিয়েই ফাঁকা ভাতাবিল শীটে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে প্রশিক্ষণার্থীদের, যার একটি কপি এই প্রতিবেদকের কাছে সংগ্রহীত আছে।শুধু তাই নয়, অনাবাসিক ছাত্রদের স্বাক্ষর নকল করে টাকা উত্তোলন করার ঘটনাও ঘটে। এখানে অনাবাসিক ছাত্রদের সংখ্যা অনুযায়ি ভাতার পরিমাণ দুই লক্ষ সাতানব্বই হাজার টাকা। শুক্রবার ও শনিবারে আবাসিক ছাত্রদের মধ্যে মাত্র ৪/৫ জন উপস্থিত থাকে। যদিও আবাসিক ৪০ জন শিক্ষার্থীর সকলের কাছ থেকেই নব্বই দিনের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। কৌশলে প্রশিক্ষনার্থীদের তিন মাসের স্বাক্ষর একবারে নিয়ে নেওয়া হয়। আবাসিক চালাতে সুদের উপর টাকা নেওয়া হয়, এই দোহাই দিয়ে উপস্থিতির ভিত্তিতে প্রাপ্য (একশত) টাকার ভাতা কমিয়ে জন প্রতি ৮০-৯০ টাকা হারে প্রদান করা হয়। নিয়ম থাকলেও কোন প্রকার ফাইল নোট দেওয়া হয় না। ভাতাবিলে কোর্স কো-অর্ডিনেটর ও আবাসিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা অন্যান্য শিক্ষকদের স্বাক্ষর নেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে কখনও তাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয় না। কত পরিমাণ টাকা বিল করা হয় সেটাও দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানতে পারেন না। তাদের স্বাক্ষরও নকল করে ট্রেজারিতে বিল জমা দেওয়া হয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চলতি ৯৯ তম ব্যাচের একাধিক শিক্ষার্থীরা জানান, গত ব্যাচের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ মূরশেদুল করিমের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ শুনেছেন। তারা সেই অভিযোগের কিছু প্রমাণও পেয়েছেন। বর্তমান ব্যাচে ৭০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও আবাসিকে থাকে ৪০ জন। বাকি ৩০ জন তাদের বাড়ি থেকে এসে ক্লাশ করেন। অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা দুপুরে খাওয়ার অনুরোধ করলেও তাতে সাড়া দেওয়া হয়নি। চলতি কোর্সে শিক্ষার্থীরা এ পর্যন্ত সাপ্তাহিক ছুটি পেয়েছেন ২৪ দিন। সামনে দুর্গা পূজার ছুটিও রয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রশিক্ষক জানান, স্বাক্ষর জালিয়াতি করে গত ৯ বছরে কোটি টাকার উপরে আত্মসাৎ করেছেন ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ মূরশেদুল করিম। তারই নির্দেশে অফিসের প্রধান সহকারী শামসুল আলম বর্তমান থাকার পর ট্রেজারির সকল কাজ করেন ক্যাশিয়ার হূমায়ুন কবির। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়েই হূমায়ুন এই সকল কাজ করেন। ব্যবহারিক ক্লাশের জন্য প্রশিক্ষণ উপকরণের কোন প্রকার টাকা দেওয়া হয় না। শুধু মাত্র ঔষধ কোম্পানির দুই/তিনটি ক্লাশ ছাড়া বিষয় ভিত্তিক অতিথি বক্তার কোন ক্লাশ হয় না।অনুপস্থিত ছাত্রদের অফিসিয়ালি চূড়ান্ত পরীক্ষার ২/৩ দিন আগে ড্রপআউট দেখিয়ে ভর্তির তারিখ থেকে শুরু করে ৮৬/৮৭ দিনের ভর্তিকৃত সকল ছাত্রের ভাতার টাকা উত্তোলন করা হয়। এছাড়াও কর্মচারীরা তার বাসায় ব্যক্তিগত কাজ না করলে, মূরশেদুল করিমের ব্যক্তিগত গরু ছাগল পালন না করলে তাদের ছুটি, বেতন ভাতা আটকিয়ে ব্যাপক ভোগান্তি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করেন এই কর্মকর্তা। এছাড়া কর্মচারীদের শারীরিক নির্যাতনও করারও অভিযোগ রয়েছে মূরশেদুল করিমের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, তার নিয়ন্ত্রিত কোন কর্মকর্তা বা প্রশিক্ষক প্রতিষ্ঠানে দিনের পর দিন অনুপস্থিত থাকলেও, মূরশেদুল করিম তাদের কাছ থেকে ‘কমিশন’ গ্রহনের মাধ্যমে হাজিরা খাতায় একদিনে একাধিক স্বাক্ষর করার সুযোগ দেন।শিক্ষার্থীরা আরও জানান, মোঃ মূরশেদুল করিম ৯ টি ব্যক্তিগত রামছাগল ও ৩ টি ব্যক্তিগত ষাড় গরু প্রশিক্ষণার্থী ও স্টাফ দিয়ে পালন করে যাচ্ছেন। অথচ যেখানে সরকারি গরু মাত্র ১ টি। এর ফলে সরকারি বাগান ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি সাধন হচ্ছে। গরু ছাগলের খাবার এদিক সেদিক হলে শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের সাথে খারাপ আচরণ করেন তিনি। ঈদুল আযাহার সময় তিনি তার ব্যক্তিগত ৪ টি রামছাগল বিক্রি করেছেন। প্রতি ব্যাচে জামানতের ফেরতযোগ্য ১০০ টাকা ঠিকমতো দেওয়া হয় না, এটাও লক্ষ টাকা পেরিয়ে গেছে বলে জানা যায়।প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নৈশ প্রহরী মো. শাহিনকে মাসোয়ারার বিনিময়ে দিনের বেলায় প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্যত্র কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে সে রাতের বেলায় নৈশ প্রহরীর দায়িত্ব পালন না করে বাসায় এসে ঘুমায়। ফলে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নিরাপত্তাহীতায় থাকে। প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষক-কর্মকর্তারা ঠিকমতো অফিস করেন না। আমাদের দৈনিক ৬টি ক্লাশ হবার কথা থাকলেও, প্রশিক্ষক না আসায় ক্লাশ হয় গড়ে ৪-৫টি। প্রতিষ্ঠানের দ্বিতল বিশিষ্ট ছাত্রী হোস্টেলে শুধুমাত্র ছাত্রীদের থাকার নিয়ম থাকলেও, সেখানে মাত্র পাঁচজন ছাত্রী থাকেন। আর ওই ভবনরে নিচতলায় ক্যাশিয়ার হুমায়ুন কবীর তার পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। হোস্টেল সুপারও সেখানে অবস্থান করেন না।ডেপুটি কো-অর্ডিনেটরের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের অনুসন্ধানে গত ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১১টায় যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সরজমিনে গেলে তার সত্যতা মেলে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার নিয়ম থাকলেও, সকাল ১১টায় কর্মরত অবস্থায় পাওয়ায় যায় মাত্র ৪-৫ জনকে। অথচ এই প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা-কর্মচারী-প্রশিক্ষক সহ মোট কর্মরত আছেন ২৯ জন। প্রতিষ্ঠানের উপ-পরিচালক আব্দুল বাছিত সহ মূরশেদুল করিম ও অনান্য কর্মকর্তাদের কক্ষে কারোর দেখা মেলেনি। অন্যান্য কক্ষগুলোতেও ৪-৫ জন কর্মকর্তা ছাড়া আর কারোর দেখা মেলেনি। দেখা মেলেনি প্রবেশ পথে গার্ড রুমে কর্মরত কোন কর্মীর। সকাল ১১টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এই প্রতিবেদক ওই প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করলেও আসেননি বাহিরে থাকা কোন কর্মকর্তা।অথচ প্রতিষ্ঠানের হাজিরা খাতায় মোঃ মূরশেদুল করিম ছাড়া সবার স্বাক্ষরের দেখা মেলে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর সোমবারও প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন এই কর্মকর্তা। একই ঘটনা দেখা যায় ২৫ সেপ্টেম্বর সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা খেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত ওই প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করে। সেদিনও দেখা মেলেনি ওই ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর সহ একাধিক কর্মকর্তার। তবে অদৃশ্য বলয়ে তাদের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করা হয়ে গেছে।এদিকে সংবাদকর্মীর আসার খবরে গোপনে প্রতিষ্ঠান থেকে সরে পরেন মূরশেদুল করিমের সব অনিয়মের মূল দায়িত্ব পালন করা ক্যাশিয়ার হুমায়ুন কবির। এসময় এই প্রতিবেদক ওই প্রতিষ্ঠানের উপস্থিত কর্মীদের সামনে মূরশেদুল করিমের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর (০১৭১৮-৮৭৭৮৬০) এ একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।অফিস সময়ে ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর কোথায় এমন তথ্য জানতে চাইলে অফিস সহকারী ফিরোজ আহমেদ জানান তিনি ডিসি অফিসে মিটিংএ গেছেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর প্রতিষ্ঠানে চতুর্থ শ্রেণির এক নারী কর্মচারীকে উনার বাসভবনে খোঁজ নিতে পাঠানো হলে, সংবাদকর্মীর আসার খবরে মূরশেদুল করিমের স্ত্রী জানান তার স্বামী ছুটিতে আছেন।এরপরই কেঁচোঁ খুরতে সাপ বের হবার অবস্থা হয়। প্রতিষ্ঠানের ছুটির ফাইল ঘেটে জানা যায় নতুন তথ্য। মূরশেদুল করিম ছুটিতে আছেন, তার স্ত্রীর এমন দাবির প্রেক্ষিতে পাওয়া যায়নি কোন ছুটির আবেদনপত্র। পাশাপাশি তিনি তার উর্দ্বতন কর্মকর্তা উপ-পরিচালক আব্দুল বাছিতের কাছ থেকে মৌখিক কোন ছুটিও নেন নি। ছুটির আবেদনপত্রের ফাইল ঘেটে দেখা যায়, একাধিক কর্মকর্তা বিভিন্ন সময়ে ছুটি নিয়েছেন। সেই ছুটির আবেদন পত্রে ‘ছুটি মঞ্জুর’ হওয়ার স্বাক্ষর থাকার বিধান থাকলেও, আবেদনপত্রগুলোর ২-৩ টি ছাড়া আরও কোন আবেদনপত্রে ছুটি মঞ্জুরের স্বাক্ষর নেই। অথচ তারপরও ছুটির ফাইলে সেগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানের একাধিক কর্মকর্তা জানান, মূরশেদুল করিম কর্মকর্তাদের ছুটির আবেদন ছাড়াই ছুটি দেন। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে কমিশন গ্রহণ করেন। আবার কেউ একদিনের ছুটি নিলে ৬-৭ দিন পর প্রতিষ্ঠানে এসে হাজিরা খাতায় একদিনেই অনুপস্থিত দিনগুলোর তারিখে উপস্থিতির স্বাক্ষর করেন।এই বিষয়ে ছুটিতে ঢাকায় থাকা প্রতিষ্ঠানের উপ-পরিচালক আবদুল বাছিতের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মূরশেদুল করিমের বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মুরশেদুল করিম নিয়মিত অফিস করেন না। তিনি আমার কাছ থেকে লিখিত বা মৌখিক কোন ছুটি নেন নি।ছুটি না নেওয়ার পরও কেন তিনি প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত নেই, সে বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল বাছিত বলেন, আমি নিজেই ছুটিতে আছি। মূরশেদুল করিম কেন প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত নেই সেই বিষয়ে আমি জানি না। তবে আমার অবর্তমানে উনার দায়িত্বে থাকার কথা। অন্য কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, সেই বিষয়েও মূরশেদুল করিমই বলতে পারবেন। তিনি কাউকে বাহিরে যাবার অনুমতি দিয়েছেন কিনা সেটা তিনিই জানেন।উপ-পরিচালক আরও বলেন, মূরশেদুল করিমের স্টাফ কোয়ার্টারের ১টি ফ্ল্যাটে থাকার কথা থাকলেও তিনি দুটি ফ্ল্যাটে বসবাস করেন। যার কোন ভাড়া তিনি দেন না। ইচ্ছে হলেই তিনি প্রতিষ্ঠানের গাছ কেটে বিক্রি করে দেন। পুকুরের মাছ ধরে বিক্রি করেন।এসব বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, একাধিকবার চেষ্টা করেই তাকে থামানো যায় নি। তিনি পুরো প্রতিষ্ঠানকে জিম্মি করে রেখেছেন। তার বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলতে গেলে তার গায়েও হাত তুলেন তিনি।
এ বিষয়ে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মাসুদা আকন্দের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এই প্রতিষ্ঠান এবং ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর মোঃ মূরশেদুল করিমের বিরুদ্ধে আগেও বিছিন্ন অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমরা অতিদ্রুতই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে এই বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

পরিচিতি ইব্রাহীম ভূইয়া

এটাও চেক করতে পারেন

টাঙ্গাইলে জেলা বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি পালিত

নিজস্ব প্রতিবেদক :টাঙ্গাইলে শেখ হাসিনার বিচারের দাবীতে জেলা বিএনপির আয়োজনে দ্বিতীয় দিনেও অবস্থান কর্মসূচি ও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *