লোকাল নিউজ ডেস্ক: যমুনা চরাঞ্চল রাস্তা-ঘাট ভাঙা। যাতায়াতের জন্য নেই কোনো যানবাহন। মোটর সাইকেল চলাচল করলেও অর্থাভাবে অসহায় ও দরিদ্র ছানু মন্ডল (৩৫) ও তার ছোট ভাই যমুনা চরাঞ্চলের রাস্তা দিয়ে হাঁটু ভাঙা আহত সন্তান কে চৌকিতে শুয়াইয়ে কাঁধে নিয়ে ছুটছেন সিরাজগঞ্জের হাড় ভাঙা এক চিকিৎসা কেন্দ্রের ডাক্তার বাড়ি। এ দৃশ্য দেখার জন্য রাস্তায় শতশত লোকজন রাস্তায় ভিড় জমাচ্ছে। করছে নানা রকম উপহাস। কেউ কেউ আবার তাদের এমন দৃশ্য দেখে চোখের পানিও ফেলছে। প্রকাশ করছে দুঃখ। অনেকেই নিচ্ছে আনন্দ।শনিবার (২২ জুন) সকাল ১০ টা ১৫ মিনিটের দিকে এমন ঘটনা দেখা গেছে যমুনা নদীর অংশে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের ৬৫ নং রুলীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে।জানা যায়, ছানু মন্ডলের বাড়ি উপজেলার রুলীপাড়া গ্রামে। তিনি পেশায় দিনমুজুর ও হতদরিদ্র। তার আহত ছেলের নাম ইমরান হোসেন। বয়স (৮)। ইমরান ওই বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণির মেধাবী ছাত্র।গত শুক্রবার ( ২১ জুন) বিকেল বেলা খেলার সময় আঘাত পেয়ে হাঁটু ভেঙে যায়। চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা ও উপায় না পেয়ে হতাশ হয়ে বাড়িতে পড়ে থাকা নামাজ পড়ার ছোট চৌকিতেই ছেলেকে শুয়াইয়ে ও চৌকির দু’পাশে একটি বাঁশের অংশ রশি (দড়ি) বেঁধে কাঁধে করে নিয়ে নৌকা ঘাটে যায় ইমরানের বাবা ছানু মন্ডল ও তার ছোট চাচা।এ সময় কথা হয় ইমরানের বাবা ছানু মন্ডল ও তার চাচার সাথে প্রতিবেদকে বলেন- গত শুক্রবার ইমরান খেলার সময় হাঁটুতে আঘাত পায়। আঘাতের পর ওর বন্ধরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিচ্ছে। এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুঁটে যাই। দেখি ইমরান পায়ের ব্যথায় প্রচন্ড কান্না করছে। এরপর তাকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে বললে আর দাঁড়াতে পারে না। নিশ্চিত হলাম হাঁটু ভেঙে গেছে। পরে তাকে কোলে নিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।তারপর কোনো যানবাহন না থাকায় বিকল্প উপায় না দেখে চৌকিতে শুয়াইয়ে নিয়ে ইমরানের চিকিৎসার জন্য বাড়ির পাশের নৌকা ঘাট পর্যন্ত কাঁধে নিয়ে যাই আবার চিকিৎসা শেষে নৌকা থেকে নামিয়ে পুনরায় বাড়িতে নিয়ে আসি। যা দেখে লোকজন নানা ধরণের মন্তব্য করছে।
