শ্রাবণে বোরো ধান চাষে মেতে উঠেছে ভূঞাপুরের কৃষক

মোঃ আব্দুর রহীম মিঞা,ভূঞাপুর : শ্রাবণে বোরো ধান চাষে মেতে উঠেছে  টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের কৃষক ।

জমি তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কৃষকেরা। জমিতে হাল চাষ, মই দেওয়া , জ্বালা উঠানো যেন দম ছাড়ার সময় নেই তাদের হাতে। এ সময় প্রন্ড তাপদাহ, খরা, বিদ্যুৎতের ঘন ঘন লোড সেডিং  কৃষক যেন জমি প্রস্ততে দিশে হারা। ইরি মৌসুমে কৃষক ধানের ভালো দাম পেয়ে শ্রাবন-ভাদ্র মৌসুমে ব্যাপক উৎসাহে চলতি সময়ে বোরো ধাষে মেতেছে । এরই মধ্যে বোরো চাষকে ঘিরে মাঠে মাঠে রোপা লাগানো উৎসব শুরু হয়েছে।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার মাঠিকাটা, গোবিন্দাসী, নিকরাইল , ফলদা, অর্জুনার ইউনিয়নের চলছে বোরো চাষের প্রতিযোগিতা। এরই মধ্যে এ উপজেলায় অগ্রিম বন্যায় পতিত জমিগুলো উর্বরতায় নতুন যৌবন ফিরিয়ে দিয়ে পানি নেমে গেছে বেশ কিছু দিন আগে।  পানি নেমে যাওয়ায় এবং দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না হওয়ায় ডিজেল চালিত মেশিনে সেচ দিয়ে চলছে জমি প্রস্তত্তি ও রোপার ধানের চারা লাগানো কাজ।  ভূঞাপুর উপজেলার ফলদা, মাদারিয়া, বাশালিা,বলারামপুর, টেপিবাড়ী আগতেরিলা, ফলদা, বাগবাড়ী ভারই,শালদাইর, কুকাদাইর, ভাদুরিচর,নিকল,খরক, বামনহাটাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে ধানের কচি চারার সবুজ গালিচা । আবার কোথাও কোথাও চলছে নলকুপ থেকে পানি সেচ, ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি প্রস্ততির কাজে ব্যস্ত থাকতে কৃষককে।
সরেজমিনে দেখা যায় কৃষকের গরু না থাকায় মাঠ সমান করতে মইয়ের উপর ঝাঁকায় মাটি দিয়ে কৃষকেই মই টেনে মাটি সমান করার দৃশ্য । আবার বোরো ধান রোপনের জন্য বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে ধানে চারা। কোথাও দেখা যায় কেউ কেউ আইলে কোদাল দিয়ে আগাছা কোপাচ্ছে। সব মিলিয়ে এ সময় কৃষক বেশ আনন্দেই সময় পার করছে কৃষি কাজে।
উপজেলার পলিশা গ্রামের  বোরো ধান চাষি রঞ্জু মন্ডল বলেন জৈষ্ঠ্য মাসে ইরি ধান কাঁটার পর পরই  অগ্রীম বন্যায় এলাকায় সব জমি তলিয়ে গিয়েছিল । আবার ২০-২৫ দিন পরে পানি নেমে যাওয়ায় বোরো ধান চাষে উপযোগী হয়েছে মাঠ । এখন তিনি ১০-১২ বিঘা গাইনজা জাতের চারা রোপন করবে। তিনি এসময়ে রোরো রোপন করে আবার শঙ্কাও প্রকাশ করেন। আমাদের এখানে যমুনা নদী  এলাকায় কাছাকাছি হওয়ায় ভাদ্র মাসে পানি বৃদ্ধি পেলে রোপা ধান তলিয়ে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তিন আরো বলেন জৈষ্ঠা মাসে ইরি ধান কাটার পর শ্রাবন-ভাদ্র মৌসুমে রোপা ধান লাগানোর জন্য বীজতলা করেছিলাম। অগ্রিম বন্যায় বেশ কিছু বীজতলা পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে।
এ এলাকার মাইজ বাড়ীর কোরবান আলীকে বোরো ধানের চাষে জমি প্রস্তত করতে দেখা যায়। তিনি বলেন আশে-পাশে অনেকে দান লাগাচ্ছে । মাঝ খানে জমি পতিত রাখা যায় না । অন্যদের সাথে তালমিলিয়ে কাজ করতে হয় । তিনি ৩ দুই বিঘা জমিতে এবার ধান লাগাচ্ছে।
বামন হাটা গ্রামের মহী উদ্দিন খান বলেন আমি এ সময়ে প্রতি বছর ২/৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করি। নাজির শাইল , গাইনজা, পাটজাগ ( আঞ্চলিক নাম) জাতের ধান লাগাই। তিনি বলেন ভাদ্র মাসে ব্যাপক পানি হয় । তখন কষ্টের ধানগুলো বন্যায় তলিয়ে যায় । তারপরও কপালের উপর ছেড়ে দেই। তিনি আরো বলেন কোন কোন সময় বন্যা হয় না । তখন যে ধান পাই তা থেকে উদ্বৃত্ত কিছু বেঁচতে পারি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো হুমায়ন কবীর জানান এসময় ভূঞাপুর উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের একমাত্র রোপা লাগানো শুরু করেছে । কত হেক্টর জমিতে রোপা ধান চাষ হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি জানান মাঠ পর্যায় থেকে পুরোপুরি তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তিনি আরো বলেন হত দরিদ্র কৃষকদেরকে আমরা কৃষি অফিস থেকে সার , বীজ সরবরাহ করেছি। বন্যায় ক্ষতি না হলে এ মৌসুমে ধানে বাম্পার ফলনের আশা করছি।

পরিচিতি Ibrahim Bhuiyan

এটাও চেক করতে পারেন

দলীয় সিদ্ধান্ত না মানায় বিএনপি নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার

নিজস্ব প্রতিবেদক : কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে অমান্য করে দ্বিতীয় ধাপে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *